কবে বাংলাদেশে রয়েল এনফিল্ড বাইক আসবে
সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছুদিন আগেই বাংলাদেশের রাস্তায় ৩৫০ cc বাইক চালানোর অনুমোদন দিয়েছে। প্রিয় পাঠক কবে বাংলাদেশে রয়েল এনফিল্ড বাইক আসবে তা সম্পর্কে জানা নেই। কোন সমস্যা নেই, আজকের এই পোস্টে আমি কবে বাংলাদেশে রয়েল এনফিল্ড বাইক আসবে ও এর সাথে আর অন্য নতুন কোন বাইক গুলো বাংলাদেশে আসতে চলেছে তা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব। তাহলে চলুন কবে বাংলাদেশে রয়েল এনফিল্ড বাইক আসবে তা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
বর্তমানে ডলারের দাম যা রয়েছে আগামী ছয় মাস পরে সেই একই দাম নাও থাকতে পারে। অর্থাৎ ডলারের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে আবার হ্রাসও হতে পারে।তারপরেও বর্তমানে যে ডলার রেট রয়েছে সে অনুযায়ী রয়েল এনফিল্ড এর দাম সম্পর্কে আমরা একটা ধারণা করতে পারি। যদি রয়েল এনফিল্ড বাইক বাংলাদেশে সরাসরি ম্যানুফ্যাকচারিং এ আসে তাহলে এর দাম পড়তে পারে আনুমানিক পাশ থেকে ছয় লক্ষ টাকা। কর আরোপের তারতম্য অন্যান্য আনুষাঙ্গিক প্রক্রিয়া করার ফলে এর দাম হ্রাস বৃদ্ধি হতে পারে।
রয়েল এনফিল্ড বাইক এর একটি অনুপ্রেরণাময় ইতিহাস রয়েছে। তাই পোস্ট টি মনোযোগ সহকারে পড়ুন তাহলে আপনি রয়েল এনফিল্ড বাইক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
রয়েল এনফিল্ড কোন দেশের কোম্পানি
অনেকে মনে করে প্রায় ভারতীয় কোম্পানি। কিন্তু রয়েল শুরুটা হয়েছিল ইংল্যান্ডে। ১৮৯৬ সালে বব ওয়য়াকার স্মিথ ও আরেক ফরাসি উদ্যোক্তা জুলেস গেটিয়েট "নিউ রয়্যাল ইনফিল্ড সাইকেল কোম্পানির নামে যাত্রা শুরু করে। শুরুতে এই কোম্পানিটি কেবলমাত্র সাইকেল উৎপাদন করত। ধীরে ধীরে ব্রিটেনে মটরযুক্ত সাইকেলের চাহিদা বাড়তে থাকলে ১৯০১ সালে কোম্পানিটি তাদের প্রথম ২৩৯ সিসি বাইক বাজার আনে।এরপর ১৯০৯ সালে প্রথম সফলতার মুখ দেখে তাদের ২৯৭ সিসি বাইক বাজারে আনার পর। রয়েল এনফিল্ড নিজস্ব বিশেষত্ব নিয়ে প্রস্তুতকৃত শক্তিশালী মোটরসাইকেল গুলো মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন রয়েল এনফিল্ড কোম্পানি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কাছ থেকে অর্ডার পায়। তারা তখন ৭৭০ সিসির ও ৬ এইচ পি ভি ভি টুইন নির্মাণ করে। এই বাইকটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করা বেশ কয়েকটি দেশের সেনাবাহিনীদের কাছে রয়েল এনফিল্ড কোম্পানি সরবরাহ করে।
বাইকটির শক্তিশালী ইঞ্জিন, বডি ও ও যে কোন রাস্তায় চলাচলের জন্য উপযোগী হওয়ায় এটি সেনাবাহিনীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এরপর ১৯২৮ সালে রয়েল এনফিল্ড তাদের প্রথম স্পোর্টস বাইক বাজারে আনার মাধ্যমে সবাইকে তাক লাগিয়ে নেয়। পাশাপাশি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিলিটারি গ্রেডের বাইক নির্মাণ করার মাধ্যমে শক্তিশালী বাইক নির্মাণের তকমা লাগিয়ে নেই রয়েল এনফিল্ড কোম্পানি।
ব্যবসায়িক সফলতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে কোম্পানিটি একের পর এক নতুন নতুন মডেলের বাইক বাজারে আনতেই থাকে। ১৯৫০ এর দশকে রয়েল এনফিল্ড তাদের বুলেট ৩৫০ সিসি বাইক ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে বিক্রি করা শুরু করে। ধীরে ধীরে সেটি সাধারণ জনগণের কাছেও জনপ্রিয় হতে শুরু করে। বিশেষ করে এর লুকিং তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করে। ১৯৬২ সালের পর থেকে ভারতেই তৈরি হয় রয়েল এনফিল্ড এর মোটর বাইক গুলো।
বাংলাদেশে কবে রয়েল এনফিল্ড কারখানা খুলবে
বাংলাদেশে রয়েল এনফিল্ডের অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর হলো ইফাদ অটোস। রয়েল এনফিল্ডের অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটার ইফাদ অটোস বলেছে যে আগামী বছর জুন জুলাই মাসে এই বাইকটি বাংলাদেশের আসবে। বর্তমানে তারা এ বাইকটি ম্যানুফ্যাকচার করার জন্য কারখানা তৈরি করছে। তাদের ফ্যাক্টরিটা এক কুমিল্লায় নির্মাণ করা হচ্ছে। এই কারখানায় রয়েল এনফিল্ড তাদের কয়েকটি বাইক সরাসরি ম্যানুফ্যাকচারিং এ চলে যাবে। আমরা আশা করছি আগামী বছর থেকে রয়েল এনফিল্ড মোটরসাইকেল বাংলাদেশের বাজারে আসবে।রয়েল এনফিল্ড বাইকের বাংলাদেশে দাম কত
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের রাস্তায় চলমান মোটরসাইকেলের সিসি লিমিট ৩৫০ পর্যন্ত বাড়িয়েছে তখন থেকেই বাংলাদেশের মানুষের মাঝে দুটো প্রশ্ন আসে। প্রথমত, বাংলাদেশের রয়েল এনফিল্ড বাইক আসবে বা রয়েল এনফিল্ড কোম্পানির বাইকের কোন কোন মডেল গুলো বাংলাদেশে আসবে এবং দ্বিতীয়ত, রয়েল এনফিল্ড বাইকের বাংলাদেশে দাম কত হবে? মূলত বাংলাদেশের রয়েল এনফিল্ডের মোট চারটি মডেল বাংলাদেশে আসবে। সেগুলো হলো-- রয়েল এনফিল্ড ক্লাসিক
- রয়েল এনফিল্ড হান্টার
- রয়েল এনফিল্ড মেটেওর
- রয়েল এনফিল্ড বুলেট
(উপরের এই চারটি বাইকই ৩৫০ সিসি সেগমেন্টের বাইক)
এই বাইকগুলোর দামের কথা বলতে গেলে ১০০% শিউর ভাবে কোন কিছুই বলা যাবে না। কারণ, এই বাইকগুলো বাংলাদেশের বাজারে আসতে গেলে এর পেছনে অনেক কর যুক্ত হবে। কিন্তু ঠিক কত শতাংশ কর দেওয়া লাগবে তা সম্পর্কে বিস্তারিত কোন তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আবার যেকোনো বাইকের দাম নির্ধারণ হওয়ার পেছনে ডলারের দামের ওঠা নামার উপর নির্ভর করে। রয়েল এনফিল্ড এর ক্ষেত্রেও তাই।
বর্তমানে ডলারের দাম যা রয়েছে আগামী ছয় মাস পরে সেই একই দাম নাও থাকতে পারে। অর্থাৎ ডলারের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে আবার হ্রাসও হতে পারে।তারপরেও বর্তমানে যে ডলার রেট রয়েছে সে অনুযায়ী রয়েল এনফিল্ড এর দাম সম্পর্কে আমরা একটা ধারণা করতে পারি। যদি রয়েল এনফিল্ড বাইক বাংলাদেশে সরাসরি ম্যানুফ্যাকচারিং এ আসে তাহলে এর দাম পড়তে পারে আনুমানিক পাশ থেকে ছয় লক্ষ টাকা। কর আরোপের তারতম্য অন্যান্য আনুষাঙ্গিক প্রক্রিয়া করার ফলে এর দাম হ্রাস বৃদ্ধি হতে পারে।
রয়েল এনফিল্ড বা অন্যান্য ৩৫০ সিসির মোটরসাইকেল বাংলাদেশে কবে কেনা যাবে
২০০৩ সালের আগে বাংলাদেশেও কোন সিসি লিমিট ছিল না। কিন্তু ২০০৩ সালে হুট করেই রাস্তায় চলাচল গাড়ি মোটরসাইকেলের সিসি লিমিট করে দেওয়া হয়। ফলশ্রুতিতে আমাদের বাংলাদেশের রাস্তায় উচ্চ সিসি সম্পূর্ণ মোটরসাইকেল গুলো চলাচল করতে পারে না। বাংলাদেশ রয়েল এনফিল্ড বাইকের অফিশিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর হলো ইফাদ অটোস।বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশের রাস্তায় ৩৫০ সিসি পর্যন্ত বাইক চালানোর অনুমতি দেওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের মানুষের মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সেটা হলো রয়েল এনফিল্ড বা অন্যান্য 350cc মোটরসাইকেল বাংলাদেশে কবে কেনা যাবে। বাংলাদেশে রয়েল এনফিল্ড বাইকের অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর ইফাদ অটোস জানিয়েছে যে আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের জুন জুলাই মাসের দিকে রয়েল এনফিল্ড মোটরসাইকেল বিক্রি করা শুরু হবে।
তার মানে বুঝতে পারছেন আমাদের এত পছন্দের বাইকটি কেনার জন্য এখনো ৭-৮ মাস অপেক্ষা করা লাগবে। রয়েল এনফিল্ড এর পাশাপাশি ৩৫০ সিসি এর ভেতরে যে সকল মোটরসাইকেল গুলো বাংলাদেশে আসতে চলেছে সেগুলোও আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে বাজারে চলে আসবে।
পরিশেষে
কবে বাংলাদেশের রয়েল এনফিল্ড বাইক আসবে, রয়েল এনফিল্ড কোন দেশের কোম্পানি, বাংলাদেশে কবে রয়েল এনফিল্ড কারখানা খুলবে, রয়েল এনফিল্ড বাইকের বাংলাদেশে দাম কত, রয়েল এনফিল্ড বা অন্যান্য ৩৫০ সিসির মোটরসাইকেল বাংলাদেশে কবে কেনা যাবে, নতুন কোন বাইক গুলো বাংলাদেশে আসতে চলেছে তা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা পেয়েছেন। আপনি যদি নতুন কোনো বাইক কিনতে চান তাহলে নতুন এই মোটরসাইকেল গুলো সম্পর্কে ধারনা থাকা দরকার। আসন্ন উচ্চ সিসির মোটরসাইকেল সম্পর্কে পরবর্তীতে সকল খবরের আপডেট জানতে আমাদের সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ।
আমাদের ওয়য়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। আপনার করা প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url