রাজশাহী শহরের দর্শনীয় স্থান সমূহ ছবি সহ
সারাদিনের কর্মব্যাস্ততার মাঝে মনটাকে একটু রিফ্রেস করার জন্য সুন্দর ও মনোরম জায়গায় গিয়ে সময় কাটাতে কে না চায়। বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলাতেই অনেক সুন্দর সুন্দর স্থান রয়েছে। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী জেলা রাজশাহীতেও অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান রয়েছে। প্রিয় পাঠক, এই পোস্টটিতে আপনি রাজশাহী শহরের দর্শনীয় স্থান সমূহ ছবি সহ দেখতে পারবেন।
রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহঃ-
- পদ্মা গার্ডেন
এটি রাজশাহী শহরের পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র। রাজশাহী শহরের প্রায় প্রত্যকটি মানুষের প্রতিদিনের আড্ডা দেওয়ার জায়গা এটি। শহরের এই জায়গাটাতে সকল বয়সের মানুষকে দেখা যায়।
রাজশাহী শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে দক্ষিণ দিকে ৩ মিনিট হাঁটলেই পাওয়া যাবে পদ্মা গার্ডেন এর মূল প্রবেশ পথ। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়নে এটি নির্মিত হয়েছে। প্রিয় মানুষকে নিয়ে চা, ফুচকা, চটপটি খেতে খেতে গল্প করার জন্য সঠিক জায়গা এটা।
- লালন শাহ মুক্তমঞ্চ
পদ্মা নদীর তীর ঘেষে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের আওতায় নির্মিত লালন শাহ মুক্তমঞ্চ হলো রাজশাহীর অন্যতম উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র। রাজশাহী মহানগরীর ফায়ার সার্ভিস মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে পদ্মা নদীর তীরে ৫৫ একর জমি নিয়ে তৈরি করা হয়।
- লালন শাহ মুক্তমঞ্চে প্রায় প্রত্যেক দিনই ছোট-বড় অনুষ্ঠান হয়। এখানে বসে থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখার সাথে সাথে পদ্মা নদীর মনোরম সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। নদীর পাড়ে বসলে পদ্মা নদীর হিমেল হাওয়া আপনার শরীর ও মনকে সিক্ত করে দিবে। পদ্মা নদীর মনরম দৃশ্য উপভোগ করার জন্য বেস্ট জায়গা এটা।
- টি-বাধ
রাজশাহী জেলার সৌন্দর্য মূলত পদ্মা নদীকে ঘিরেই। আর এই পদ্মার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য পদ্মা নদীতে নির্মিত টি-বাধ অন্যতম। পদ্মা নদীতে একাধিক বাধ নির্মান করা হয়েছে। তন্মধ্যে, একটি বাধের আকৃতি বর্ণমালার 'T' এর মতো দেখতে হওয়ায় এই বাধটি সকলের কাছে টি-বাধ নামেই পরিচিত।
বাধের পাড়ে বসে থেকে সময় কাটানোর পাশাপাশি নৌকায় উঠে নদীর পানিতে ভেসে বেড়াইতে পারবেন। নদীর পাড়ের ক্ষয়রোধ করার পাশাপাশি এটি হয়ে উঠেছে মানুষের বিনোদন কেন্দ্র।
- শহীদ জিয়া শিশু পার্ক
পরিবারের ছোট বাচ্চাদের বিনোদন দেওয়ার জন্য রাজশাহী শহরের নওদাপাড়ায় অবস্থিত শহীদ জিয়া শিশু পার্কে ঘুরে আসতে পারেন। ২০০৬ সালে এটি নির্মাণ করা হয়।
শহীদ জিয়া শিশু পার্কের মূল প্রবেশ পথ |
শিশুদের আনন্দ দেওয়ার জন্য পার্কটির ভেতরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের রাইড। পার্কের ভেতরে হ্রদের মাঝখানে একটি কৃত্তিম পাহাড় তৈরি করা আছে যা পার্কের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
- বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর
রাজশাহী শহরের হেতেম খাঁ তে অবস্থিত বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরটি হলো বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর। এটি ১৯১৩ সালে উদ্বোধন করা হয়। বাংলার ঐতিহ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য এটি নির্মান করা হয়। বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে ৯ হাজারেরও অধিক নিদর্শন সংরক্ষিত আছে। বাংলার ঐতিহ্য সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের জন্য এটি পরিদর্শন করতে পারেন।
বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর |
- রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা
রাজশাহী শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে রাজপাড়ায় এটি অবস্থিত। রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় গেলে আপনি বিভিন্ন প্রানী দেখতে পাবেন। এখানে বাঘ, সিংহ, হরিণ, গাধা, ভাল্লুক ঘোড়া, অজগর সাপ, পেচা, বাজপাখি, টিয়া, ময়না সহ আরও বিভিন্ন ধরনের জীবজন্তু রয়েছে।
মৎস কুমারীর ফোয়ারা |
শহরের মানুষদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এখানে শিক্ষা সফরে আসে। চিড়িয়াখানার ভেতরে নির্মিত কৃত্তিম পাহাড়ের চূড়ায় উঠলে পদ্মা নদীর সৌন্দর্যও উপভোগ করা যায়।
- রাতের রাজশাহী
বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, চারিদিকে সবুজে ঘেরা শহর হলো রাজশাহী। আর এই রাজশাহী শহরের শোভা বর্ধনের জন্য রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মহোদয় প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। বর্তমানে রাজশাহী শহরের রাস্তায় ব্যাবহার করা হয়েছে অনেক সুন্দর ল্যাম্পপোস্ট। রাতের বেলায় এই ল্যাম্পপোস্ট গুলো দেখতে অনেক সুন্দর লাগে।
রাতের বেলা প্রিয় মানুষটার সাথে রিক্সায় চড়ে রাজশাহী শহরের এই অপরুপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।
ইতিকথাঃ
মনটাকে রিফ্রেশ করার জন্য রাজশাহী শহর বেস্ট একটা জায়গা। কারণ রাজশাহী শহরের মতো এতো নির্মল বাতাস আপনি বাংলাদেশের আর কোনো শহরে গিয়ে পাবেন না। তাই যদি কখনো রাজশাহী তে ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছা থাকে তাহলে উপরোক্ত স্থানগুলোতে ঘুরে দেখতে পারেন। আর রাজশাহী শহরের এই জায়গাগুলো ঘুরে আসার পর আপনার মতামত অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন।
আমাদের ওয়য়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। আপনার করা প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url