ভেজালমুক্ত খেজুরের গুড় চেনার উপায় | অনলাইনে ভেজালমুক্ত খেজুরের গুড় কিনুন
প্রিয় পাঠক অনলাইনে কিংবা বাজারে ভেজাল খেজুরের গুড় কিনে প্রতারিত না হতে চাইলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ এই আর্টিকেলটিতে ভেজালমুক্ত খেজুরের গুড় চেনার উপায় সম্পর্কে বলা হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের কাছে থেকে অনলাইনে ভেজালমুক্ত খেজুরের গুড় বিক্রেতা র কাছে থেকে কিভাবে খেজুরের গুড় কিনবেন তা জানতে পারবেন।
ভেজালমুক্ত খেজুরের গুড় চেনার উপায় সম্পর্কে জানার জন্য আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। এই আর্টিকেলের শেষে আমাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া থাকবে।
খাটি খেজুরের গুড়
ভৌগলিক অবস্থার কারণে ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি এই সময়ে আমাদের বাংলাদেশে শীতকাল বিরাজ করে। আর শীতকাল আসলেই চারিদিকে শীতকালীন পিঠা-পুলির উৎসব শুরু হয়ে যায়। আর শীতকালে খেজুরের গুড় দিয়ে যেসকল পিঠা, পায়েস ক্ষীর তৈরি করা হয় অন্যান্য পিঠার চাইতে খেজুরের গুড়ের পিঠায় একটা অন্যরকম স্বাদ পাওয়া যায়। তাই শীত আসলেই সকল পিঠা প্রেমীরা ভেজালমুক্ত খেজুরের গুড় খুজেন। কিন্তু বর্তমানে অনেক অসাধু ব্যাবসায়ী বিভিন্ন ধরণের রাসায়নিক পদার্থ ও চিনি ব্যাবহার করে খাটি খেজুরের গুড়ের নামে ভেজাল গুড় বিক্রি করে নিয়মিত মানুষদেরকে ঠকাচ্ছেন। আমরা অনেকেই আছি যারা এসব ভেজাল গুড় কিনে প্রতারিত হচ্ছি। এভাবে প্রতারিত না হতে চাইলে ভেজালমুক্ত খাটি খেজুরের গুড় চেনার উপায়গুলা জানতে হবে।
আরও পড়ুনঃ- শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়
ভেজালমুক্ত খেজুরের গুড় চেনার উপায়
বর্তমানে খেজুরের গুড়ে ভেজাল মিশানোর বিষয়টা অনেকটাই সাধারণ হয়ে পড়েছে। চিনি ও বিভিন্ন রাসায়নিক রঙ ব্যাবহার করে এসব খাটি গুড়ের নামে ভেজাল গুড় তৈরি করা হয়। তবে কিছু কৌশল অবলম্বন করে আমরা খুব সহজেই এসব ভেজাল গুড় চিনতে পারবো। চলুন তাহলে ভেজালমুক্ত খেজুরের গুড় চেনার উপায় গুলো জেনে নিই। কৌশল গুলো হলো-
বাজারে গেলেই দেখবেন একেক দোকানের গুড়ের রঙ একেক রকমের। কোনো দোকানের গুড়ের রঙ একটু লালচে বর্ণের আবার কোনোটা কমলা রঙের। বাজারে যেসব গুড় বিক্রি হয় সেগুলোর মধ্যে এক ধরনের গুড় দেখা যায় যেগুলো দেখতে অনেক চকচকে উজ্জ্বল লাল বর্ণের হয়। ভেজালমুক্ত খাটি খেজুরের গুড় হবে সব সময় গাঢ় খয়েরি রঙের বা একটু কালচে রঙের অথবা গাঢ় বাদামি রঙের। তাই অন্য রঙের গুড় দেখলেই মনে করবেন যে ওই গুড়টি খাটি নয়, এই গুড়ে অতিরিক্ত রাসায়নিক মেশানো আছে।
খেজুরের গুড়ের পাটালি কেনার সময় পাটালির ধারটা আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিয়ে দেখে নিবেন। যদি আপনার আঙ্গুলের হালকা চাপেই বুঝতে পারেন গুড়ের পাটালি টা নরম তাহলে বুঝে নিবেন যে এটি আসল খাটি খেজুরের গুড়। আর পাটালির ধারটা যদি অনেক শক্ত অনুভূত হয় তাহলে বুঝে নিবেন ঐ গুড়টি ভেজাল গুড়। কঠিন ধার ওয়ালা খেজুরের পাটাল গুড় না নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
গুড় কেনার সময় অল্প সামান্য গুড় মুখে দিয়ে টেস্ট করে নিবেন। গুড়ের টেস্ট যদি নোনতা ভাবের হয় তাহলে বুঝবেন গুড়টি খাটি নয়।
গুড়ের স্বাদ যদি সামান্য তেতো হয় তাহলে বুঝতে হবে যে গুড়টি একটু বেশীক্ষণ ধরে জ্বাল দেওয়া হয়েছে যার কারণে গুড়ের স্বাদটি এরকম হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে যদিওবা কোনোরুপ ভেজাল দ্রব্য ব্যাবহার করা হয় না তবুও স্বাদের দিক দিয়ে দেখতে গেলে এরকম গুড়ের পিঠাতে খেজুরের গুড়ের যে আসল অনন্য স্বাদ রয়েছে সেটি পাওয়া যায় না।
ভেজালমুক্ত খেজুরের গুড়
উপরোক্ত কৌশলগুলো অবলম্বন করলে আশা করছি আপনি ভেজালমুক্ত গুড় খুব সহজেই চিনতে পারবেন।
খেজুরের গুড় তৈরি করার নিয়ম
শীতকালে খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি করা পিঠা চিনি দিয়ে বানানো অন্যান্য পিঠার স্বাদে, গন্ধে অতুলনীয় হয়ে থাকে। তাই শীতকাল আসলেই গ্রামে কিংবা শহর অঞ্চলে খেজুরের গুড় ব্যাবহার করে বিভিন্ন ধরণের সুস্বাদু পিঠা তৈরি করা হয়। আমরা যারা গ্রামঅঞ্চলে বসবাস করি তার কিভাবে খেজুরের গুড় তৈরি করা হয় তা সম্পর্কে খুব ভালো করেই জানি। কিন্তু আমরা যারা শহর অঞ্চলে বসবাস করি তাদের মধ্যে অনেকেই আছি যারা কিভাবে এই সুস্বাদু খেজুরের গুড় তৈরি করা হয় তা সম্পর্কে জানি না। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক খেজুরের গুড় তৈরি করার নিয়ম সম্পর্কে-
খেজুরের গাছ পরিস্কার করাঃ খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য শীতের শুরুতে প্রথমেই গাছিরা (যারা খেজুরের রস সংগ্রহ করার জন্য গাছ কাটেন তারা) খেজুর গাছের ডালপালা ছাটাই করেন। তারপর তারা খেজুর গাছের বুক চিড়তে শুরু করেন। প্রায় আধা হাতের মতো জায়গার ছাল তুলে ফেলা হয়। আর এভাবে প্রায় ৮ থেকে ১০ দিন রেখে দেওয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে ছাল তুলে ফেলা যায়গাটা শুকিয়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ- রাজশাহী শহরের দর্শনীয় স্থান সমূহ ছবি সহ
খেজুরের গাছ কেটে রস বের করাঃ দ্বিতীয় পর্যায়ে এসে গাছিরা পুনরায় ঐ একই জায়গা কাটতে শুরু করেন। সাধারণত দ্বিতীয়বার কাটার পরেই খেজুরের গাছ থেকে রস বের হতে শুরু করে। দ্বিতীয়বার কাটার পরেও যদি রস বের না হয় তাহলে ২/১ দিন পরে আবার কাটতে হয়।
খেজুরের রস সংগ্রহ করাঃ খেজুরের গাছ কাটার পরে যে রস বের হয় তা খেজুরের গাছের সাথেই একটা হাড়ি ঝুলিয়ে দিয়ে হাড়িতে রস সংগ্রহ করা হয়। সাধারণত গাছিরা দুপুরের পরে খেজুরের গাছে উঠে গাছ কাটার পরে হাড়ি ঝুলিয়ে দিয়ে আসেন এবং খুব সকালে গিয়ে গাছ থেকে হাড়ি নামিয়ে বড় কোনো পাত্র রসগুলো সংগ্রহ করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। আপনাদের আরেকটি কথা জানিয়ে রাখি, মূলত দুপুরের পর থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত যে রসটি জমা হয় সেটি দিয়েই আসল গুড় তৈরি করা হয়। আর সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যে রস বের হয় সেটির গুনগত মান ভালো হয় না। আর এসব খারাপ রস ব্যাবহার করেই নিম্নমানের গুড় তৈরি করেন অসাধু ব্যাবসায়ীরা।
খেজুরের রস জ্বাল দেওয়াঃ খেজুরের গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করার পর তা বাড়িতে আনার পর জ্বাল দেওয়ার আগে সংগ্রহকৃত রসগুলোকে একটি ছাকনি দিয়ে ছেকে নেওয়া হয়। তারপর রসগুলোকে মাটির চুলার ওপর রাখা চতুর্ভুজ আকৃতির বড় তাওয়া বা পাত্রে ঢালার পর প্রায় ৩ ঘন্টা জ্বাল দেওয়া হয়। এভাবে জ্বাল দেওয়ার কারণে রসগুলো ধীরে ধীরে ঘণ হতে থাকে। এরপর রস জ্বাল দেওয়া শেষ হলে ন্য একটি পাত্রে ঢেলে ঠান্ডা করে নেওয়া হয়।
ঠান্ডা গুড় থেকে অল্প সামান্য একটু রস নিয়ে আলাদা একটা জায়গায় ঘষতে থাকে এতে করে একটা সময় পর এটি সাদা বা বাদামী রং ধারণ করে। সাদা এ অংশটাকে খেজুরের গুড়ের বীজ বলা হয়। তারপর এই বীজ আবার আলাদা করে রাখা রসের মধ্যে ভালোভাবে মেশানো হয়। আর এভাবেই তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুরের গুড়। তৈরিকৃত খেজুরের গুড় বিভিন্ন ছোট ছোট পাত্রে ঢেলে রাখা হয় এবং প্রয়োজন মতো বিভিন্ন আকার দেওয়া হয়। তারপর তা বাজারজাত করা হয়।
আরও পড়ুনঃ- কবে বাংলাদেশে রয়েল এনফিল্ড বাইক আসবে
অনলাইনে ভেজালমুক্ত খেজুরের গুড় বিক্রেতা
শীতকাল আসলেই চারিদিকে পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। আবার অনেকেই আছেন যারা শীতকাল ছাড়াও বছরের অন্যান্য সময়েও পিঠা খেতে খুব ভালোবাসেন। তবে শীতকাল আসলে আমরা সবাই খেজুরের গুড়ের পিঠা বানানোর চেষ্টা করি। কিন্তু এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হলো বর্তমানে বাজারে গিয়ে খেজুরের গুড় কিনতে গেলে আমরা ভেজাল গুড় কিনে প্রতারিত হই। খাটি গুড় নিতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন এখানে।
আরও পড়ুনঃ- আমলকিতে কোন কোন পুষ্টি উপাদান থাকে-আমলকি খেলে কি কি উপকার হয়
লেখকের চূড়ান্ত মন্তব্য
আমার আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে বা আপনার উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই পরিচিতদের সাথে শেয়ার করবেন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এই ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।
আমাদের ওয়য়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। আপনার করা প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url