খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

শীতকালে চারিদিকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে আছে, এমন সময় শীতের সকালের মিষ্টি রোদের মধ্যে বসে থেকে এক গ্লাস খেজুরের রস খেতে কার না ভালো লাগে। আমাদের দেশে শীতকালে চারিদিকে খেজুরের রস ও খেজুরের গুড় খাওয়ার ধুম লেগে যায়।


কিন্তু আমরা অনেকেই এই খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানিনা। এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়লে আপনি খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। তাই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইলো।

খেজুরের রস কখন খাওয়া উচিত

খেজুরের রস সংগ্রহ করার জন্য প্রতিদিন বিকেল বেলা গাছিরা (যারা খেজুরের গাছ কাটে) খেজুরের গাছে একটি হাড়ি ঝুলিয়ে দেন। খেজুরের গাছ থেকে ফোটায় ফোটায় রস এসে এই হাড়িতে জমা হয়। আর এই খেজুরের রস অনেক সকাল সকাল খাওয়া উচিত।

খেজুরের রস কখন খাওয়া উচিত নয়

দিনের বেলায় অর্থাৎ চারিদিকের আবহাওয়া গরম হয়ে গেলে তখন খেজুরের রস খাওয়া উচিত নয়। এর কারন হলো দিনের বেলায় খেজুরের রসে গাজন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। যার ফলে খেজুরের রসের স্বাদ কিছুটা অম্ল প্রকৃতির হয়ে যায়। দিনের বেলায় খেজুরের রস খাওয়ার পর আমাদের নানা রকমের অস্বস্তি দেখা দেয়।

খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা

খেজুরের রস আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটা পানীয়। এতে প্রচুর পরিমানে আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আমাদের মধ্যে যাদের রক্তস্বল্পতার সমস্যা আছে তাদের জন্য খেজুরের গুড় অনেকটাই কাজে আসে। খেজুরের রসে প্রচুর পরিমানে গ্লুকোজ থাকে যা আমাদের শরীরে এনার্জি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে।

খেজুরের রসকে আপনি এনার্জি ড্রিংক এর সাথে তুলনা করতে পারবেন। যারা কাজকর্মে ভালো জোর পান না বা যারা শারীরিক দুর্বলতায় ভুগছেন তার নিয়মিত এই খেজুরের রস পান করতে পারেন। এতে করে আপনি অনেক উপকৃত হবেন। মোটকথা আমাদের শরীরের জন্য খেজুরের রস ও গুড় দুটোই উপকারী।

খেজুরের রস কতটুকু খাওয়া উচিত

একজন সুস্থ মানুষ এক থেকে দুই গ্লাস খেজুরের রস খেতে পারবেন। যেহেতু এটি আপনি একটা এনার্জি ড্রিংক হিসেবে পান করবেন তাই এই রস খাওয়ার কোনো ধরাবাধা নিয়ম নেই। তবে যেকোনো জিনিসই প্রয়োজনের তুলনায় বেশী খাওয়া উচিত নয়।

কাদের খেজুরের রস খাওয়া উচিত নয়

শীতকাল আসলে সকালবেলা এক গ্লাস খেজুরের রস সবারই খেতে ইচ্ছা করে। খেজুরের রস যদি পরিষ্কার পরিবেশে সংগ্রহ করে খাওয়া হয় তাহলে এতে কোনো ক্ষতি নেই। তবে যদি কেউ বিশেষ কোনো রোগে আক্রান্ত থাকেন তাহলে তাদের জন্য খেজুরের রস এড়িয়ে চলা উচিত।
খেজুরের রসে রয়েছে প্রচুর পরিমানে চিনি। তাই যাদের ডায়বেটিস আছে তাদের ক্ষেত্রে খেজুরের রস না খাওয়াই ভালো।


খেজুরের রসে থাকা পটাশিয়াম কিডনি রোগীদের জন্য ক্ষতিসাধন করে। তাই রক্তের সমস্যা আছে এমন ব্যাক্তিদের খেজুরের রস না খাওয়াটাই উত্তম।
শীতের সকালে খেজুরের রস অনেকটাই ঠান্ডা হয়ে থাকে। অত্যধিক ঠান্ডা রস খাওয়ার ফলে যাদের হাপানি বা অ্যাজমা সমস্যা আছে তাদের জন্য এই ঠান্ডা রস খাওয়ার ফলে তাদের এই সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।

খেজুরের রস খাওয়ার অপকারিতা

কাচা খেজুরের রস খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে খেজুরের রস খেলেই যে এমন সমস্যা সবার হবে তা নয়। অতিরিক্ত বা অস্বাস্থ্যকর খেজুরের রস খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার দেখা দিতে পারে। খেজুরের রস খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে যেসকল সমস্যা দেখা দিতে পারে তা হলো-
নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত
এজমা বা হাঁপানি
ডায়াবেটিস
এলার্জি
কিডনির সমস্যা
পেট ব্যথা ও গ্যাস্টিকের সমস্যা
কোষ্ঠকাঠিন্য
মাথা ব্যথা
এছাড়াও শরীরের গঠন বা ধারন ক্ষমতা অনুসারে একেকজনের একেক রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। খেজুরের রস খাওয়ার ফলে যে কোন শারীরিক অসুস্থতার জন্য আমাদের ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ সেবন করা উচিত।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়য়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। আপনার করা প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url