রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর সহজ পদ্ধতি

বর্তমানে আমাদের সকলের একটি বাজে অভ্যাস গড়ে উঠেছে আর সেটা হচ্ছে রাত জেগে থাকা।আমরা কম বেশি সকলেই মাঝে রাত জাগার প্রবণতা অনেক বেশি। ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হচ্ছে দেখা দিচ্ছে। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর জন্য কিছু সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। যেমন


  • প্রতিদিন তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যান: প্রতিদিন তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যান এবং তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠুন।প্রতিদিন তাড়াতাড়ি ঘুমালে এতে আপনার ঘুম ভালো হবে এবং সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙে যাবে।
  • ইলেকট্রিক জিনিস ব্যবহার না করা: ঘুমানোর অত্যন্ত ৩০ মিনিট আগে ইলেকট্রনিক জিনিস ব্যবহার বন্ধ করুন। যেমন মোবাইল, টিভি, কম্পিউটার ইত্যাদি। এগুলো ঘুমানোর আগে ব্যবহারের কারণে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের আলো এর ওপর নেতিবাচক অভাব ফেলে।
  • ব্যায়াম করা: ঘুমানোর আগে হালকা ব্যায়াম বা হাটাহাটি করতে পারে।
  • শান্ত পরিবেশ তৈরি করা: ঘুমানোর পূর্বে ঘুমানোর সঠিক পরিবেশ তৈরি করুন। ঘুমানোর জন্য ঘরটি অন্ধকার নিরিবিলি ও শান্ত রাখুন। চেষ্টা করবেন ঘর এর তাপমাত্রা যেন স্বাভাবিক।

রাতে ঘুম না হলে করনীয়

প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুম অবশ্যই প্রয়োজন। এতে করে আপনার কাজের এক্টিভিটি বাড়বে। রাতে ঠিকমতো ঘুম না হলে, সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব লেগে থাকে। এতে করে শরীরের উপর বাজে প্রভাব ফেলে। বিভিন্ন কারণে অনেকেরই রাতে ঠিকমতো ঘুম হয় না। এইজন্য কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন, যা আপনাকে ঘুমাতে সাহায্য করবে। রাতে টেনশন মুক্ত থাকার চেষ্টা করুন টেনশনের কারণে ঘুমের উপর নেগেটিভ প্রভাব ফেলে।

রাতে ভারী খাবার থেকে বিরত থাকুন, হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। রাতে ঘুমানোর আগে হালকা ব্যায়াম করুন। ঘুমানোর আগে হালকা ব্যায়াম করলে এটা আপনার ঘুম আসতে সাহায্য করবে। ঘুমের জন্য ভালো পরিবেশ তৈরি করুন, ভালো পরিবেশ না থাকার কারণে অনেক সময় ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।
দিনের বেলা অসময়ে ঘুম থেকে বিরত থাকুন।

দিনের বেলা অসময়ে ঘুমালে রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। যদি একান্ত ইচ্ছা হয় তবে দুপুরে কিছুক্ষণ ঘুমাতে পারে। চেষ্টা করবেন রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া এবং সকলের তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা। রাতে যদি ঘুম আসতে খুব বেশি সমস্যা হয়, তবে চেষ্টা করুন দিনের বেলা না ঘুমানোর এতে করে রাতে তাড়াতাড়ি আপনার ঘুম চলে আসবে। যদি ঘুমের সমস্যা দীর্ঘদিন হয় তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।

ঘুম না আসলে কি দোয়া পড়তে হয়

একটি মানুষের জন্য সুস্থতা আল্লাহ তায়ালার একটি নেয়ামত। রাতে ঘুম না আসলে আমরা অনেক রকম পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকি। প্রতিটা মানুষের জন্য প্রয়োজন। মানসিক প্রশান্তির জন্য অবশ্যই পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। রাতে ঠিক মতো ঘুম না হলে সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব লেগে থাকে, আর এতে করে কাজেরও ব্যাঘাত ঘটে।

এইজন্য আমরা অনেকেই ঘুমের ওষুধ খেয়ে রাতে ঘুমাতে যায়। ঘুমের ওষুধ খেয়েও অনেকে ঠিকঠাক মত ঘুম হয়না। এইজন্য রাতে ঘুমানোর আগে আমরা ঘুমের দোয়া করে ঘুমাতে পারি। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তালার ইচ্ছায় আমাদের ভালো মতো ঘুম হবে ।
দোয়া:
উচ্চারণ: "আল্লাহুম্মা গারাতিন নুজুম, ওয়াহাদা'তিল উয়ুন, ওয়াঅনতা হাইয়ুন কাইয়্যুম, লা তাখুঝুকা সিনাতুন ওয়ালা নাওম, ইয়াহাইয়ু ইয়াকাইয়্যুম, আহদিয়া লাইলি ওয়া আনিম আয়নি।"

অর্থ: "হে আল্লাহ, তারকারা হারিয়ে গেছে, চোখগুলো শান্ত হয়েছে, এবং আপনি চিরঞ্জীব ও রক্ষাকর্তা, আপনাকে কখনও নিদ্রা স্পর্শ করতে পারে না, হে চিরঞ্জীব, হে রক্ষাকর্তা, আমার রাতকে শান্ত করুন এবং আমার চোখকে ঘুমানোর মতো করুন।"

এছাড়া ঘুমানোর সময় আয়াতুল কুরসি পাঠ করে ঘুমাবেন ইনশাআল্লাহ আপনার ভালো ঘুম হবে।

রাতে ঘুম না হলে কি কি সমস্যা হয়

রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে অনেকগুলো সমস্যা দেখাতে পারে। যেমন শরীরে দুর্বলতা, ওজন কমে যাওয়া, হাই ব্লাড প্রেসারের সমস্যা, শারীরিক ক্লান্তি ও দুর্বলতা, মানসিক সমস্যা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।
শরীর দুর্বলতা: রাতে ঠিক মতো ঘুম না হলে শরীরে দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। কারণ মানুষের জীবনে বেঁচে থাকার জন্য যেমন খাবার খাওয়ার যতটা প্রয়োজন ঠিক তেমনি পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন। একটি মানুষ পর্যাপ্ত না ঘুমালে তার শরীরে দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।
  • ওজন কমে যাওয়া: রাতে ঘুম না হলে শরীরের উপর বিশেষ করে প্রভাব ফেলে, এতে করে আস্তে আস্তে শরীরের ওজন কমে যায়। এইজন্য আমাদের প্রতিদিন অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের প্রয়োজন।
  • হাই ব্লাড প্রেসার এর সমস্যা: ঘুমের কারণে হাই ব্লাড প্রেসার এর মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। এতে করে আপনার জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। এই জন্য অবশ্যই রাতে সময় মতো ঘুমাতে যান।
  • শারীরিক ক্লান্তি: অতিরিক্ত কাজ করার ফলে যে শুধু শরীরে ক্লান্তি ভাব আসে বিষয়টা ঠিক এমন নয়। আপনি যদি রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ না ঘুমান তাহলেও আপনার শরীরে ক্লান্তি হবে থেকেই যাবে। এই জন্য শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর করার জন্য সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণ ঘুম প্রয়োজন।
  • মানসিক সমস্যা: ঘুমের অভাবে আমাদের মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঘুমের অভাবে আমাদের স্মৃতিশক্তি কমে দিতে পারে। এছাড়াও একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যারা অতিরিক্ত রাত জাগে তাদের মাঝে সুসাইড করার প্রবণতা অনেক বেশি থাকে।

প্রাকৃতিক উপায়ে ঘুম আসার উপায়

প্রাকৃতিক উপায়ে ঘুম আসার কিছু নিয়মাবলী রয়েছে, যদি আপনি এগুলো নিয়মিত পালন করলে আপনার ঘুমের সমস্যার সমাধান হতে পারে।

  • রাতে ঘুমানোর আগে হালকা গরম দুধ খেতে পারেন। এতে করে ঘুম আসতে আপনার সহায়তা করবে।
  • রাতে ঘুমানোর আগে আপনি চাইলে হালকা ব্যাম করতে পারেন। রাতে হালকা ব্যাম ঘুম আনতে চমৎকার কাজ করে।
  • রাতে ঘুমানোর আগে গোসল করে নিতে পারেন। এতে করে আপনার শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর করবে এবং আপনার ঘুম আসতে সাহায্য করবে।
  • রাতে ভারী খাবার থেকে বিরত থাকুন এবং হালকা খাবার খান।
  • ঘুমানোর আগে চা কিংবা কফি খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।

লেখকের শেষ কথা

ঘুম প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে প্রয়োজন। আপনি যদি দীর্ঘ সময় না ঘুমান তবে আপনার শরীরের উপর এটি নেগেটিভ ফেলবে। শুধু তাই নয় আপনার জীবনের ঝুঁকি থেকে যায়। তাই অবশ্যই প্রতিদিন নিয়মিত সময়ে ঘুমোতে যাওয়া এবং পর্যাপ্ত ঘুম নেওয়া আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি সময় মতো না ঘুমান এবং পর্যাপ্ত ঘুম না নেন তাহলে সারাদিনই আপনি ক্লান্ত এবং দুর্বলতা অনুভব করবেন।

এতে করে আপনার দৈনন্দিন কাজের উপরে বাজে প্রভাব ফেলবে। সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব লেগেই থাকবে। আপনি যদি একদিন না ঘুমান তাহলে আপনার শরীরের ক্লান্তি অনুভব হবে মেজাজ সারাদিন খিটমিটে থাকবে। এজন্য আমাদের অবশ্যই উচিত প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম নেওয়া, এবং রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়য়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। আপনার করা প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url