গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা
আজকে আমরা গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানব। কাঁচা কলায় অনেক ভিটামিন রয়েছে যা আমাদের মানব দেহের জন্য অনেক উপকার। এটা শুধু খেতে মজাদার নয় পাশাপাশি শরীরের জন্য অনেক উপকারি একটি সবজি যা আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত।
কাঁচা কলা খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, ওজন কমাতে সাহায্য করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ভিটামিনের চাহিদা দূর করে এছাড়াও এমন অনেক কাজ রয়েছে যা নিয়মিত কলা খেয়ে শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। কাঁচা কড়াই রয়েছে অনেক পুষ্টিকর উপাদান যা গর্ভাবস্থায় মায়ের পুষ্টির চাহিদা মিটায়। কাঁচা কলা গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর জন্য অনেক উপকারী।
নিম্নে কাঁচা কলার কিছু উপকারিতা গুলো আলোচনা করা হলঃ
- হজমে সহায়তাঃ গর্ভাবস্থায় খাবারের হজমের সমস্যা, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্যর ইত্যাদির সমস্যা হয়ে থাকে যা কাঁচা কলা খেলে সুস্থ রাখে সহায়তা করে।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনঃ কাছে কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে যা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে।
- শরীরের শক্তি বৃদ্ধিঃ গর্ভাবস্থায় একজন মহিলার দুর্বলতা অনুভূতি হয়। ফলে তাদের শরীরে শক্তির প্রয়োজন। এই শক্তির প্রয়োজনের ঘাটতি পূরণ করতে কাঁচা কলা দারুন ভাবে কাজ করে। কারণ কাঁচা কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেনঃ আমাদের সবজি তালিকায় কাঁচা কলা রাখা অবশ্যই প্রয়োজন। কেননা এটি অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ এর ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য এই সমস্যার সমাধান করে দেই।
সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা
সকালে কলা খাওয়ার অনেক উপায় রয়েছে। সেটি কাঁচা কলা হোক কিংবা পাকা কলা। প্রতিদিন আমাদের অবশ্যই দুটি থেকে তিনটি পাকা কলা খাওয়া উচিত। কেননা পাকা করার রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন যা আমাদের দৈনন্দিন জীবন যাপনে শক্তি যোগায়। এছাড়াও পাকা করার অনেক গুণাবলী রয়েছে।
কলা বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন চিনি কলা, সাগর কলা, সুপ্রি কলা ইত্যাদি ধরনের কলা হয়ে থাকে। সকালে আমরা খালি পেটে কলা খেতে পারি তবে প্রথমে প্রোটিন জাতীয় কিছু খাবার খেয়ে নেওয়া উচিত অথবা সাথে মিশিয়ে খেতে পারি। যেমন দুধের সাথে কলার মিল্ক এর বানিয়ে খেতে পারি। খালি পেটে শুধু কলা খেলে অ্যাসিডিটির ও কারণ হতে পারে।
নিয়মিত কলা খাওয়ার উপকারিতা
নিয়মিত কলা খাওয়া আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কেননা এটি ভিটামিনে ভরপুর। পাকা কলা একটি সহজলভ্য এবং পুষ্টিকর ফল হওয়ায় প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় এটি রাখতে পারেন। শুধু পাকা কলা নয় কাঁচা কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম।যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে এবং বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি দেয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে শুরু করে, রক্তচাপ, হজম শক্তি বৃদ্ধি করা থেকে শুরু করে এমন অনেক রোগ রয়েছে যেগুলো থেকে মুক্তিতে। এইজন্য ফল কিংবা শাকসবজি হিসেবে আমাদের খাবারের তালিকায় কল রাখা অবশ্যই প্রয়োজন। পাকা কলা খেতে অনেক সুস্বাদু হওয়ায় সকলে এটি খেতে পছন্দ করে।
খালি পেটে কলা খেলে কি গ্যাস হয়
খালি পেটে কলা খেলে কি গ্যাস হয় এই নিয়ে আমাদের অনেকেরই দুশ্চিন্তা রয়েছে। হ্যাঁ খালি পেটে কলা খেলে অনেক সময় গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়। এইজন্য কলা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই প্রোটিন জাতীয় কোন খাবার খেয়ে নেওয়া ভালো। এতে করে এসিডিটির সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।
তবে খালি পেটে কলা খাওয়ার পরিবর্তে বাদাম দুধ এর সাথে মিক্সড করে কলা খাওয়া যেতে পারে। প্রতিদিন সকালের খাবারের তালিকায় অত্যন্ত একটি করে হলেও কলা খাওয়া উচিত। এতে করে আমাদের সারাদিনের শক্তি যোগায় সহায়তা করে। সকালে খালি পেটে কলা খেলে যদি এক মিনিট সমস্যা হয় তবেই না খাওয়াই ভালো।
কলা খাওয়ার সঠিক সময়
কলা খাওয়ার সঠিক সময় কোনটি এটি আমরা অনেকেই জানিনা। এইজন্য কলা খাওয়ার কিছু সঠিক নিয়ম আপনাদের মাঝে তুলে ধরা হলোঃ
- তবে সকালে রাস্তার সাথে একটি করে কলা খেলে দিনের শুরুতে আপনার শরীরে শক্তি জগতের সহায়তা করবে। এজন্য দিনের শুরুতে সকালে নাস্তার সাথে একটি করে কলা খেতে পারেন।
- আপনি যদি নিয়মিত ব্যায়াম করেন ব্যায়ামের আগে বা পরে একটি করে কলা খেতে পারেন।
- সকালের নাস্তা এবং দুপুরের রাস্তার মাঝামাঝি একটি করে কলা খেতে পারেন।
- দুপুরের খাবারের পর একটি কলা খেতে পারে এটি আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
- বিকালের নাস্তার সাথে কলা খেতে পারেন।
দিনে কয়টি কলা খাওয়া উচিত
প্রতিদিন কয়টি করে কলা খাওয়া উচিত এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার শরীর এবং বয়সের ওপর। তবে প্রতিদিন এর থেকে দুইটি টাকা কলা যথেষ্ট। করার সাইজ ছোট বড় হলে সেক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে। অতিরিক্ত কলা খেলে এটি সমস্যাও দেখা যেতে পারে। এই জন্য প্রতিদিন এক থেকে দুইটি কলায় যথেষ্ট।
এছাড়া বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক রয়েছে। পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় পাকা কলা খাওয়ার ও অনেক উপকারিতা রয়েছে। বাচ্চাদের দিনে একটি কলা যথেষ্ট। যারা প্রাপ্তবয়স্ক তারা দিনে দুই থেকে তিনটি কলা খেতে পারে এবং বয়স্কদের জন্য একটি থেকে দুটি কলা যথেষ্ট।
কলা খেলে কি ওজন বাড়ে
আমাদের মনে অনেকেরই ভুল ধারণা রয়েছে যে প্রতিদিন কলা খেলে হয়তো আমাদের শরীর ওজন বাড়ে। কথাটি কিন্তু পুরোপুরি শক্তি নয়। প্রতিদিন একটি থেকে দুটি কলা খেলে আপনার শরীরে শক্তি যোগান দিতে সাহায্য করবে এবং পাশাপাশি আপনার শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবেন। তবে পরিমাণে বেশি কলা খেলে শরীরের ওজন বাড়তে পারে।
দিনে প্রাপ্তবয়স্ক হলেন দুই থেকে তিনটি কলা যথেষ্ট। কেননা বেশি কলা খেলে ক্ষতি হতে পারে। এজন্য আমাদের যে কোন জিনিস পরিমাণ মতো খাওয়ার ভালো। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে তবেই কলা খাওয়া প্রয়োজন।
লেখকের শেষ কথা
গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে আমরা জানলাম। যেকোনো জিনিসের যেমন ভাল দিক রয়েছে ঠিক তেমনি খারাপ দিকও রয়েছে। এজন্য যেকোনো জিনিস পরিমাণ মত খাওয়ার ভালো। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় যে কোন জিনিস খাওয়ার পূর্বে ভালোমতো জেনে তারপরে খাওয়া উচিত।
এতে করে মা এবং শিশু উভয়ের জন্যই উপকার হয়। তবে গর্ভাবস্থায় খাবারের তালিকায় সবজি হিসাবে কাঁচা কলা যুক্ত বলবে এ থেকে অনেক উপকারিতা পাওয়া যাবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেকোনো জিনিস পরিমাণ মতো হাওয়ায় ভালো, তা না হলে এর উল্টো ক্ষতি হতে পারে।
আমাদের ওয়য়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। আপনার করা প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url