কি খেলে হাঁপানি ভালো হয় - এজমা হলে কি কি খাওয়া নিষেধ

এজমা হলো দীর্ঘস্থায়ী শ্বাস্কষ্টজনিত একটি সমস্যা যা আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের কার্যপ্রণালীকে কষ্টকর করে তোলে। এজমা একটি মরণব্যাধি রোগ। কারণ এই রোগের কারণে আমাদের শ্বাস নিতে অনেক কষ্ট হয়। আর সঠিকভাবে এর চিকিৎসা না করা হয় তাহলে এটি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
এজমা-কেন-হয়
প্রিয় পাঠক এই আর্টিকেলটিতে হাঁপানি বা এজমা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আর্টিকেলটিতে এজমা কেন হয়, কি খেলে হাঁপানি ভালো হয় ও এজমা কি পুরোপুরি ভালো হয় কি না তা বলা হয়েছে। সেই সাথে আর্টিকেলটি পড়লে আপনি এজমা হলে কি কি খাওয়া নিষেধ তা জানতে পারবেন। তাহলে চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

এজমা কেন হয়

এজমা একটি দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসজনিত সমস্যা। তবে এই সমস্যার নির্দিষ্ট কোনো কারণ জানতে পাওয়া যায় নি। সাধারণভাবে এজমা সৃষ্টির পেছনে যেসকল কারণ বা উদ্দীপক এই জিনিসটাকে ত্বরান্বিত করে সেগুলো একটু ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলেই বোঝা যায়। আমরা অনেকেই আছি যারা এজমা হওয়ার কারণ বা এজমা কেন হয় তা সম্পর্কে জানি না।

আর্টিকেলের এই অংশে এজমা হওয়ার প্রধান কারণসমূহ উল্লেখ করা হলোঃ
  • জেনেটিক বা বংশগত কারণ
  • অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা
  • পরিবেশগত কারণ
  • অ্যালার্জি
  • সংক্রমণ বা ইনফেকশন
  • জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাস
  • শারীরিক পরিশ্রম ও আবহাওয়া
এজমার কারণ গুলো ব্যাক্তিভেদে আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। তবে সাধারণত বংশগত ও পরিবেশগত প্রভাবের কারণে এজমার লক্ষণগুলো ত্বরান্বিত হয়ে থাকে। সচেতন থাকলে এবং এজমার ট্রিগারগুলো এড়িয়ে চললে এজমার প্রকোপ কমিয়ে রাখা সম্ভব।

কি খেলে হাঁপানি ভালো হয়

হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়ম অনুযায়ী প্রোপার ডায়েট প্ল্যান মেনে চলতে হবে। আমরা অনেকেই জানতে চাই যে কি খাবার খেলে হাঁপানি ভালো হয় তথা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। হাঁপানি নিয়ন্ত্রনে রাখতে বা এর প্রকোপ কমাতে কিছু খাবার আছে যা অনেকাংশে সাহায্য করে থাকে। এসব খাবার আমাদের শ্বাসনালীর প্রদাহ কমিয়ে রাখে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ফুসফুসের কার্যক্ষমতার উন্নতি করে থাকে।
কি-খেলে-হাঁপানি-ভালো-হয়
হাঁপানি রোগীদের জন্য উপকারী কিছু খাবার হলোঃ
  • পালং শাক
  • আপেল
  • বেদানা
  • আঙ্গুর
  • ব্রোকলি
  • চা
  • ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড
  • ভিটামিন সি
  • ভিটামিন ই
  • আদা ও হলুদ
  • সবুজ শাক-সবজি
  • রসুন ইত্যাদি
তবে, খাবার শুধু হাঁপানি নিয়ন্ত্রণের সহায়ক; এটি হাঁপানি নিরাময়ের উপায় নয়। নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ এবং ডাক্তারদের পরামর্শ মেনে চলা জরুরি।

এজমা কি পুরোপুরি ভালো হয়

প্রিয় পাঠক, হাঁপানি বা এজমা একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা পুরোপুরি ভাবে নিরাময় করা সম্ভব নয়। তবে সঠিক চিকিৎসা, সচেতনতার সহিত জীবনযাপন করা ও নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ করার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। হাঁপানি হলে শ্বাসনালীর প্রদাহ এবং সংকোচন ঘটে যা আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের কার্যপ্রণালীকে ব্যাহত করে।

অনেকের ক্ষেত্রে হাঁপানির তীব্রতা সময়ের সাথে কমে যেতে পারে, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে, তবে এটি আবারও ফিরে আসার ঝুঁকি থাকে। হাঁপানির পুরোপুরি নিরাময় না হলেও কিছু বিষয় এটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হতে পারে।

নিয়মিত ঔষধ সেবন, অ্যালার্জেন অর্থাৎ ধুলাবালি, পরাগ রেণু, ধোঁয়া, এবং ঠান্ডা আবহাওয়া হতে সচেতন থাকা, ব্যায়াম ও শ্বাসপ্রশ্বাসের অনুশীলন করা, পর্যাপ্ত ঘুম ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং সেইসাথে নিয়মিত ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করার মাধ্যমে হাপানিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

এজমা হলে কি কি খাওয়া নিষেধ

এজমা হলে রোগীকে কিছু কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত কারণ এসব খাবার গ্রহণ করার ফলে শ্বাসনালীতে প্রদাহ বা শ্লেষ্মা তৈরি করতে পারে এবং হাপানির প্রকোপ বাড়িয়ে দিতে পারে। এজমা বা হাঁপানি হলে কি কি খাবার খাওয়া নিষেধ তা আমরা অনেকেই জানি না। আর না জানার কারণে এজমা রোগীকে এসব নিষিদ্ধ খাবার খাওয়ানোর ফলে রোগীর সমস্যা আরও বেশী হয়ে থাকে। আর্টিকেলের এই অংশে এজমা হলে কি কি খাবার খাওয়া নিষেধ তা উল্লেখ করা হয়েছে।
  • দুগ্ধজাত খাবার
  • প্রক্রিয়াজাত খাবার
  • চিনি এবং মিষ্টি
  • অতিরিক্ত লবণ
  • ফাস্ট ফুড এবং জাঙ্ক ফুড
  • অ্যালকোহল
  • অ্যাসিডিক খাবার
  • ফ্রোজেন বা ঠাণ্ডা খাবার
  • চিংড়ি ও সামুদ্রিক খাবার
  • প্রাণীজ প্রোটিন, বিশেষ করে রেড মিট
  • অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে এমন ফলমূল

লেখকের পরামর্শ

হাঁপানি বা এজমা এমন একটি মরণব্যাধি রোগ যা পুরোপুরি ভাবে নিরাময় করা সম্ভব নয়। তবে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করার মাধ্যমে এটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। প্রাথমিক অবস্থায় এর চিকিৎসা করা না হলে পরবর্তীতে এটি বিরুপ আকার ধারণ করতে পারে। আর্টিকেলটিতে এজমা বা হাঁপানি সম্পর্কিত সকল ধরণের তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হয়েছে।

আর্টিকেলটিতে এজমা কেন হয়, কি খেলে হাঁপানি ভালো হয়, এজমা কি পুরোপুরি ভালো হয় কি না তা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। সেইসাথে আর্টিকেলটিতে এজমা রোগীর এজমা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এজমা হলে কি কি খাওয়া নিষেধ তা উল্লেখ করা হয়েছে। আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন।

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন। আর্টিকেল সম্পর্কিত কোনো তথ্য বা মতামত জানতে বা জানাতে নিচে কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়য়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। আপনার করা প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url